রুশ অধ্যাপকের ব্যাগে প্রেমিকার কাটা হাত!
মাতাল অবস্থায় ব্যাগসহ নদীতে পড়ে গিয়েছিলেন রাশিয়ার একজন প্রখ্যাত অধ্যাপক। আর সেই ব্যাগে ছিল এক নারীর কাটা হাত!
এমনটিই দাবি করা হয়েছে রাশিয়ার একটি আদালতে। আর সে দাবির সত্যতাও মিলেছে।
প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে কাঠগড়ায় দাঁড়ালেন প্রফেসর ওলেগ সোকোলফ নামের সেই ইতিহাসবিদ। ইতিমধ্যে প্রেমিকাকে হত্যা করার কথা স্বীকারও করেছেন তিনি।
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, নিহত ২৪ বছর বয়সী আনাস্তাসিয়া ইয়েশচেঙ্কোর ছিলেন ওই ইতিহাসবিদের সাবেক এক ছাত্রী। তার সঙ্গে আনাস্তাসিয়ার প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা দুজনেই ফরাসি ইতিহাস পড়েছেন এবং দুজনেই ঐতিহাসিক সময়ের পোশাকে সাজগোজ করতে ভালোবাসতেন।
কিন্তু মিস আনাস্তাসিয়া নিখোঁজ হলে পরে তার বিকৃত দেহ ওই অধ্যাপকের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এর পর সাবেক ছাত্রী ও প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হন অধ্যাপক সোকোলফ। আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, খুনের পর অধ্যাপক একটি নদীতে পড়ে গিয়েছিলেন এবং তার ব্যাগের মধ্যে ওই নারীর হাত ছিল। তিনি ওই নারী দেহের অংশগুলো নদীতে ফেলার জন্যই সেখানে গিয়েছিলেন।
সোকোলফের আইনজীবী আলেকজাণ্ডার পচুইয়েভ এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘অধ্যাপক সোকোলফ তার অপরাধ স্বীকার করেছেন। এ অপরাধের জন্য তিনি এখন দুঃখিত এবং বর্তমানে পুলিশকে সহযোগিতা করছেন তিনি।’
খুনের বর্ণনা দিতে গিয়ে পুলিশকে প্রফেসর সোকোলফ বলেন, ‘কোনো একটি বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডার সময় মেজাজ হারিয়ে ফেলি। তর্কাতর্কির একপর্যায়ে আনাস্তাসিয়াকে খুন করি। এর পর করাত দিয়ে তার মাথা, হাত ও পা কেটে ফেলি।’
সবার অগোচরে মৃতদেহ সরিয়ে নদীতে ফেলে দিতেই প্রেমিকা আনাস্তাসিয়ার দেহ কেটে টুকরো টুকরো করেছিলেন বলে জানান তিনি।
আইনজীবী পচুইয়েভ বলেছেন, ‘অধ্যাপক সোকোলফ মানসিক চাপে ভুগছিলেন। নদীতে ডুবে হাইপোথার্মিয়ার শিকার হয়ে বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’
এদিকে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর ফ্রান্সের ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্স, ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্স নামের প্রতিষ্ঠান তার সদস্য পদ বাতিল করেছে।
এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘ওলেগ সোকোলফের ভয়ঙ্কর অপরাধের কথা জেনে আমরা বিস্মিত। আমরা কখনও ভাবতেও পারিনি তিনি এ ধরনের নৃশংস কাজ করতে পারেন। এ ঘটনার পর ওলেগ সোকোলফকে আমাদের বিজ্ঞানবিষয়ক কমিটি থেকে অপসারণ করা হলো।’
উল্লেখ্য, নেপোলিয়নবিষয়ক বিশেষজ্ঞ এই প্রফেসর সোকোলফ। যাকে ফ্রান্স লেজিয়ন দ্য অনিউর নামে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করেছে।
এই ইতিহাসবিদ নেপোলিয়নের ওপর বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন এবং বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে ইতিহাসবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি এবং মিস ইয়েশচেঙ্কো যৌথভাবে বেশ কিছু বই ও গবেষণাপত্র লিখেছেন। বিভিন্ন সময়ে নেপোলিয়নের অভিনয়ও করেছেন এই অধ্যাপক।