পারিবারিক সহিংসতায় ভেঙ্গে যাচ্ছে পরিবার

এই ডিজিটাল সময়ে আমাদের পরিবারে ঘুন পোকার মতো এক কালো ছায়া কোন না কোন ভাবে পরিবার গুলোত নিমোজ্জিত হচ্ছে, বেড়ে যাচ্ছে পারিবারিক সহিংসতা নির্যাতন প্রচলিত আইন থাকলেও নেই কোন আইনী চেষ্টা, সোনার সংসার গুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে যে কোন মুহূর্তে।

আমরা বাংলাদেশের প্রচলিত একটি আইন ‘পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০’ প্রতি লক্ষ করলে দেখতে পাই,

পারিবারিক সহিংসতা বলতে কি বোঝায়?

এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পারিবারিক সহিংসতা বলিতে পারিবারিক সম্পর্ক রহিয়াছে এমন কোন ব্যক্তি কতৃর্ক পরিবারের অপর কোন নারী বা শিশু সদস্যের উপর শারীরিক নির্যাতন, মানসিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন অথবা আর্থিক ক্ষতিকে বুঝাইবে।

 ব্যাখ্যা : এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে-

 (ক) "শারীরিক নির্যাতন" অর্থে এমন কোন কাজ বা আচরণ করা, যাহা দ্বারা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির জীবন, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা বা শরীরের কোন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয় অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকে এবং সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে অপরাধমূলক কাজ করিতে বাধ্য করা বা প্ররোচনা প্রদান করা বা বলপ্রয়োগও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

 (খ) "মানসিক নির্যাতন" অর্থে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহও অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা :-

 (অ) মৌখিক নির্যাতন, অপমান, অবজ্ঞা, ভীতি প্রদর্শন বা এমন কোন উক্তি করা, যাহা দ্বারা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়;

(আ) হয়রানি; অথবা

(ই) ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ অর্থাৎ স্বাভাবিক চলাচল, যোগাযোগ বা ব্যক্তিগত ইচ্ছা বা মতামত প্রকাশের উপর হস্তক্ষেপ;

 (গ) "যৌন নির্যাতন" অর্থে যৌন প্রকৃতির এমন আচরণও অন্তর্ভুক্ত হইবে, যাহা দ্বারা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির সম্ভ্রম, সম্মান বা সুনামের ক্ষতি হয়;

 (ঘ) "আর্থিক ক্ষতি" অর্থে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহও অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা -

 (অ) আইন বা প্রথা অনুসারে বা কোন আদালত বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কতৃর্ক প্রদত্ত

আদেশ অনুযায়ী সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি যে সকল আর্থিক সুযোগ-সুবিধা, সম্পদ বা সম্পত্তি লাভের অধিকারী উহা হইতে তাহাকে বঞ্চিত করা অথবা উহার উপর তাহার বৈধ অধিকার প্রয়োগে বাধা প্রদান;

 (আ) সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র প্রদান না করা;

(ই) বিবাহের সময় প্রাপ্ত উপহার বা স্ত্রীধন বা অন্য কোন দান বা উপহার হিসাবে প্রাপ্ত কোন সম্পদ হইতে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা বা উহার উপর তাহার বৈধ অধিকার প্রয়োগে বাধা প্রদান;

 (ঈ) সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির মালিকানাধীন যে কোন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি তাহার অনুমতি ব্যতিরেকে হস্তান্তর করা বা উহার উপর তাহার বৈধ অধিকার প্রয়োগে বাধা প্রদান; অথবা

 (এ) পারিবারিক সম্পর্কের কারণে যে সকল সম্পদ বা সুযোগ-সুবিধাদিতে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির ব্যবহার বা ভোগদখলের অধিকার রহিয়াছে উহা হইতে তাহাকে বঞ্চিত করা বা উহার উপর তাহার বৈধ অধিকার প্রয়োগে বাধা প্রদান।

এ ধরণের সমস্যায় আমরা কি কোন ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকি, প্রশ্ন ???

আইন জানার প্রশ্নে লিংক -http://bdlaws.minlaw.gov.bd/act-details-1063.html?fbclid=IwAR2dOYvyKgO15TQDvygSZPhdtI4Np8SPvUgDeurbmC9dpN2HX-M7kgzsCro

পরিবার ভেঙ্গে যাওয়ার নেপথ্যে;

#পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধি

#প্রচলিত ডিভোর্স পদ্ধতি অতি সহজীকরণ

#সমস্যা সমাধানে বিকল্পপন্থা অবলম্বন না করা

#সমাজে নতুন নতুন অসামাজিক কালচারের আভিভার্ব

#ধর্মীয় রীতিনীতি পালনে ব্যর্থতায়

#বিবাহ বিচ্ছেদের উর্ধ্বমুখী প্রবনতা

#লিভটুগেদার বৃদ্ধি

#অল্পবয়সে অসামাজিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া

#সম্পর্ক ভাঙ্গার প্রবনতা বাড়ছে

#পরকীয়া প্রেম

#পারিবারিক সহিংসতা দেরীতে বিবাহ বাড়ছে

#সিঙ্গেল প্যারেন্টদের সংখ্যা বৃদ্ধি

#সমলিঙ্গে বিবাহের আইনী বৈধতা

#সন্তান জন্ম দেয়ার প্রবনতা কমছে

#গর্ভ ভাড়া ও টেস্ট টউব বেবি

#অসহায় সন্তানেরা

#মাদকাষক্তে আসক্ত

#প্রচলিত আইনে না অংশগ্রহণ ও আইনী জটিলতায় অনিহা

#মানসিক সমস্যা

#পারিবারিক অর্থনৈতিক সমস্যায়

উপরোক্ত বিষয়ে আমরা সবাই কমবেশি অবগত আছি, এ ধরণের সমস্যা থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসতে যে কোন ধরণের সমস্যা সম্মুখে উপস্থিত হোক না কেন, সেই সমস্যাকে প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত/নির্ধারিত করে পারিবারিক, সমাজিক ভাবে, বিশেষজ্ঞের শরনাপন্ন এবং সর্বোপরি আইনী প্রক্রিয়ায় সমাধানের চেষ্টা করা।

পারিবারিক ভাবে-

‘‘সমস্যা যেখানেই থাকুক না কেন সমাধান সেখানেই অন্তর্নিহিত’’ সমস্যা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মুক্ত আলোচনার পর নিজেরা নিজেদের ভুলগুলোকে বুঝা এবং সর্বপরি ধর্মীয় অনুভূতির মাধ্যমে নিজেদের চেষ্টায় সমস্যা সমাধান করা।

সমাজিক ভাবে-

পারিবার এবং সমাজ একে অপরের প্রাণ, অতএব যে সমস্যা পারিবারিক ভাবে সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয় সেই ক্ষেত্রে সামাজিক/পারিবারিক আত্মীয় স্বজন নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা। 

বিশেষজ্ঞের শরনাপন্ন-

বিশেষজ্ঞের শরনাপন্ন এটা খুবই এখন সাধারণ বেপার মাত্র, এতে করে যে কোন সমস্যা খুবই সহজেই নির্ধারণ করা সম্ভব এর সাথে কিছু গাইডলাইন নিয়ে সমস্যা সমাধানর চেষ্টা করা।

আইনী প্রক্রিয়ায়-

পারিবারিক সামাজিক বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে ব্যর্থতায় আইনী পক্রিয়ায় যাওয়া উচিৎ তবে আইনী প্রক্রিয়া যে কোন সময় গ্রহণ করা যাবে, তবে এ ক্ষেত্রে সমস্যার মাত্রার উপর নির্ভর করবে।

সর্বপরি সমস্যা যাই হোক না কেন সমাধান সঠিক টাই করতে হবে, পারিবারিক সমস্যা আজ সমাজের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে, যদি শুরতেই সমস্যা সমাধান হয়ে যায় তাহলে এই সোনার পরিবার গুলো রক্ষা পাবে।

…..অসমাপ্ত।

সমস্যা সেখানে সমাধানও সেখানেই।

চিন্তা চেতনার অনুষন্ধানী লেখক সংগঠক। আইন পেশার পাশাপাশি মানবাধিকার রক্ষাকারী ও সম্পাদনায় সাপ্তাহিক মাসিক পত্রিকায় এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ আইন বিভাগে এলএল.বি. (অনার্স) ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া আইন বিভাগ থেকে এলএল.এম. (মাস্টার্স অব ল) করে বর্তমানে ঢাকায় আইন পেশায় নিয়োজিত। 

এ.জেড.এম. আব্দুস সবুর

অ্যাডভোকেট, জজ কোর্ট, ঢাকা।

মোবাঃ ০১৯২৪৮৬৩৩৯৯, ০১৭৯৬২০৬০৬৪

E-mail-azmabdussobur@gmail.com