সমুদ্র সম্পদ সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো যেন সমুদ্রসম্পদ সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারে সেজন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ সময় বুধবার (৩ মে) রাতে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম ও ফ্রেন্ডস অফ ওশেন অ্যাকশন আয়োজিত ভার্চুয়াল ওশেন ডায়ালগের তৃতীয় দিনে নরিশিং বিলিয়নস সেশনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। একইদিন সকাল বেলা ‘দি হাই সিস: অপারেটিং উইদিন দি গ্লোবাল কমনস’ সেশনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বক্তব্য রাখেন।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এই বৈঠক হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই মহামারি আমাদের নতুন করে চিন্তা করতে শিখিয়েছে সমুদ্রের স্বাস্থ্য ও মানুষের স্বাস্থ্যের মধ্যে সম্পর্ক আছে। রোগ প্রতিরোধের জন্য সামুদ্রিক সম্পদ একটি উৎস। কোভিড-১৯ মহামারির চিকিৎসার জন্য সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় সমুদ্রের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম আগের যেকোনও সময়ের থেকে বেশি সময়োপযোগী। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পুষ্টির জন্য সমুদ্র কার্যক্রম অত্যন্ত জরুরি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করি।
টেকসই উপায়ে সমুদ্রসম্পদ আহরণে প্রযুক্তি ও উন্নয়নশীল দেশে উৎপাদিত সামুদ্রিক পণ্যের বাজারে প্রবেশাধিকার দরকার জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এজন্য আমাদের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে। আমি এই লক্ষ্যে তিনটি প্রস্তাব পেশ করছি।
তিনি তার প্রস্তাবে সমুদ্রসম্পদ সর্বোচ্চ ব্যবহার করার জন্য সবার সহযোগিতা চাওয়ার পাশাপাশি আঞ্চলিক মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও অবৈধ মৎস্য আহরণ বন্ধ করার জন্য যৌথ গবেষণার ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রীর তৃতীয় প্রস্তাবে কোথায় সমুদ্রসম্পদ আছে, সেগুলোর ব্যবস্থাপনার জন্য ম্যাপিং, সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে জীববৈচিত্র্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বাংলাদেশে ১৪ লাখ নারীসহ এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ মৎস্য খাতের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম। প্রাণীজ আমিষের অর্ধেকেরও বেশি সরবরাহ হয় মৎস্যের মাধ্যমে। উন্নত উৎপাদন ব্যবস্থা ও অধিক মৎস্য আহরণ প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশে উৎপাদন অনেক বেড়েছে।
শহরায়ণের ফলে অভ্যন্তরীণ নদী-নালা কমছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ব্লু অর্থনীতি উদ্যোগের অংশ হিসাবে আমরা সামুদ্রিক মাছ আহরণকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশু, অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোরী, গর্ভবতী নারী ও যে মা শিশুদের দুধ দেয় তাদেরসহ অন্যদের পুষ্টিস্তর আরও বৃদ্ধির জন্য সরকার কাজ করছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) অনেক লক্ষ্য অর্জনে সমুদ্রসম্পদ সহায়তা করে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লক্ষ্য ১৪ (গোল ১৪) বাস্তবায়ন আগের যেকোনও সময়ের থেকে গুরুত্বপূর্ণ।